সীমানার বাহিরে জোরপূর্বক খাজনা আদায়, অভিযোগে ব্যর্থ হয়ে মানববন্ধন

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার নন্দীগ্রামে নিদিষ্ট সীমানার বাহিরে জোরপূর্বক খাজনা ও টোল আদায় বন্ধে প্রশাসনকে অভিযোগ করার পরেও ব্যর্থ হয়ে টোল ও খাজনা আদায় বন্ধে এবং হাটের উন্নয়নের দাবীতে মানববন্ধন করেছে দাসগ্রাম বাজারের খাজনা আদায়কারি, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা।

বৃহস্পতিবার ৪ এপ্রিল বিকাল ৫টায় উপজেলার বুড়ইল ইউপির দাসগ্রাম বাজার মাঠে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায়, নন্দীগ্রাম উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হাট ও বাজার দাসগ্রাম। ১ বছর যাবৎ এই হাট ইজারা নিয়েছে জাহাঙ্গীর আলম বাদশা। হাট এবং বাজারের খাজনা ও টোল আদায় করে আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যাক্তি।

মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মধ্যে দাসগ্রাম হাট ও বাজার অবস্থিত। নিয়ম অনুযায়ী এই হাটের সিমান্তে অন্য ইজারাদার টোল এবং খাজনা আদায় করতে পারবে না। কিন্তু উপজেলার ৫নং ভাটগ্রামের ইজারদারের আদায়কারিরা বুড়ইল ইউপির ৫,৬,৭ নং ওয়ার্ডে এসে অবৈধভাবে টোল ও খাজনা আদায় করছে। 

৬নং ওয়ার্ডের খাজনা আদায়কারি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৫নং ইউনিয়নের মো: ওবায়দুল, আরিফ হোসেন, আক্কাস আলী, আব্দুর রশিদেরা তাদের সীমানা অতিক্রম করে আমাদের সীমান্তে এসে অবৈধভাবে জোরপূর্বক খাজনা ও টোল আদায় করছে। তাদের নিষেধ করলে তারা বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি, ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। ১নং বুড়ইল ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানকে এই বিষয়ে অবগত করলেও সে এই বিষয়ে কোন সুষ্ঠু সমাধান দিতে পারেনি বলেও আব্দুর রাজ্জাক জানান। বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ,কে,এম রেজাউল করিম তানসেন কে অবহিত করলে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করলেও কোন সমাধান হয়নি বলে বক্তারা জানান। 

১নং বুড়ইল ইউনিয়নের ৪, ৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ফেরদৌসি আরা লিখিতভাবে দাবী করে বলেন, বুড়ইল ইউনিয়নের মধ্যে কহুলী, দোহার, রিধইল, সিংজানী, কামুল্লা, খেংশহর, আইলপুনিয়া, তেঘরী সহ আরো অন্যান্য গ্রামের মধ্যে টোল উত্তোলন কার্যক্রম চালাচ্ছে ৫নং ভাটগ্রাম ইউনিয়নের খাজনা আদায়কারিরা। এমনকি নন্দীগ্রাম পৌরসভা থেকেও আমার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের মধ্যে গিয়ে সিধইল, শুকানগাড়ী, গ্রামের টোল অবৈধভাবে উত্তোলন করছে।

নিদিষ্ট এলাকার বাহিরে টোল আদায় করা বন্ধ সহ ইউনিয়ন গুলোর এরিয়া ভাগ করে না দিলে ভবিষ্যতে উক্ত টোল উত্তোলন নিয়ে যে কোন ধরনের দূর্ঘটনা ঘটনা সম্ভবনা রয়েছে বলে ফেরদৌসী আরা জানান। এছাড়া মানববন্ধনে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দাসগ্রাম হাটে বিগত দিনে কোন ধরণের উন্নয়ন হয়নি। তারা দাসগ্রাম হাট ও বাজারের টিনের চালা মেরামত, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য সরকারি উদ্যোগ দাবী করেন। যদি তাদের দাবী বাস্তবায়ন না করা হয় তবে ব্যবসায়ীরা খাজনা দিবে না বলে কঠোর হুশিয়ারি দেন।

অভিযোগের বিষয়ে ৫নং ভাটগ্রাম হাটের দায়িত্বে থাকা আক্কাস আলী বলেন, আমাদের সীমানায় আমরা টোল এবং খাজনা উত্তোলন করি না। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে ।

১নং বুড়ইল ইউপির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, আমি চাই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী উভয় পক্ষ হাটের খাজনা ও টোল আদায় করুক। এতে কোন সহিংসতা হবে না।

জানতে চাইলে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হুমায়ুন কবির বলেন, এই বিষয়টি আমরা পূর্ব থেকে অবগত আছি ইতিপূর্বেও নির্দিষ্ট সীমানা বাদ দিয়ে অন্য সীমানায় গিয়ে খাজনা ও টোল আদায়ের ঘটনাও ঘটেছিল আমরা তাৎক্ষনিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। যদি একই ঘটনা পুনরায় ঘটে তাহলে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেব।

উক্ত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, দাসগ্রাম হাট ও বাজারের খাজনা আদায়কারি আব্দুর রাজ্জাক, ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য কোরবান আলী, স্থানীয় দোকানদার আরিফুল ইসলাম, ফেরদৌস ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, কালাম হোসেন, মজনু, মানিক মালী, নাঈম হোসেন, গোপ্যা মহন্ত, অজিত মহন্ত, গুরুপদ সরকার, মো: জিন্নাহ, বদিউজ্জামান, মোজাফফর হোসেন, রায়হান, রুবেল হোসেন, হোসেন সহ শতাধিক স্থানীয় জনতা।

এ ধরণের আরো কিছু খবর