রাজশাহী বাঘায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে পুলিশি হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহী ব্যুরো চীফঃ আগামী চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৫ নং বাউসা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নুর মোহাম্মদ (তুফান)’কে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করছে পুলিশ, এমন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নুর মোহাম্মদ তুফান এর স্ত্রী রোজিনা আকতারী। ৮ ডিসেম্বর ( বুধবার) দুপুর ১২টায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার স্বামী নুর মোহাম্মদ তুফান বাউসা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এবং সাবেক চেয়ারম্যান। এছাড়াও তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বিশ্বাস করে জননেত্রীর কর্মী হিসেবে কাজ করে চলেছে। তিনি বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। আমার স্বামী ১৯৯৪ সাল থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে আসছেন। দুঃখের বিষয় এবার আমার স্বামীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমার স্বামীর জনপ্রিয়তার কারনে নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করার পর থেকেই শফিকুল ইসলাম শফিক নামের একজন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা আমার স্বামী ও পরিবারের উপর অমানবিক নির্যাতন ও তান্ডব চালিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২রা ডিসেম্বর ২০২১ ইং রাত আনুমানিক ১০টার দিকে শফিকুর ইসলাম (শফিক) এর নেতৃত্বে অন্যান্য লোকজন আমার বাসায় এসে আমার স্বামীকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার জন্য বার বার চাপ সৃষ্টি করতে থাকে এবং টাকা’র লােভ দেখায়। গত ৩রা ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে রাত আনুমানিক ১২টার দিকে তারা পুনরায় আসে এবং একই প্রস্তাব দেয়। তাদের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় গালি গালাজ করে চলে যায় এবং সর্বশেষ ৪রা ডিসেম্বর ২০২১ইং তারিখে রাত আনুমানিক ১১.৩০ মিনিটে কিছু বহিরাগত গুন্ডা-পান্ডা ৩০ থেকে ৩৫টি মােটর সাইকেল এবং একটি মাইক্রোবাস নিয়ে এসে সম্পূর্ন বাড়ি ঘেরাও করে। বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে বাসার বাইরে ডাকাডাকি করে। এসময় তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বাসার ভিতরে প্রবেশ করার উদ্দেশ্যে গেট ভাঙ্গার এবং প্রাচীর টপকানাের চেষ্টা করে। এসময় বাসায় আমি একা ছিলাম। আমার স্বামী ও গ্রামবাসী সবাই ক্যাম্পিং এর কাজে বাহিরে ছিল। এমতাবস্থায় আমার জীবন বাঁচানাের জন্য আশে পাশের মহিলাদের ফোন করে সাহায্য চাইলে তখন তারা মাইকিং করে। মাইকিং শুনে তারা তাড়াহুড়াে করে এদিক ওদিক পালানাের চেষ্টা করে। তারাই একে অপরের ধাক্কা ধাক্কিতে পড়ে যায়। এসময় গ্রামবাসীর হাতে দুইজন মুখােশধারী বহিরাগত সন্ত্রাসী ধরা পড়ে। এদের আমরা সুস্থ্য ও সুন্দর ভাবে পুলিশের কাছে সােপর্দ করি। গভীর রাত্রিতে আনুমানিক ৩.৩০ মিনিটের দিকে ওসি সাহেব ফোন করে বলে আপনার ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আপনি এসে পাল্টা মামলা করে যান। ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে আমার স্বামী তিনটি ছেলে নিয়ে থানায় যান এবং সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করা হয়। আমি তাদের ফোন বন্ধ পেয়ে ওসি সাহেবকে বার বার ফোন করতে থাকলে এক পর্যায়ে তিনি ফোন রিসিভ করে বলেন আমার স্বামী এসপি সাহেবের সাথে দেখা করতে গেছেন। তখন আমি বিভিন্ন স্থান থেকে খবর নিতে থাকলে সকাল ১০টার দিকে নিশ্চিত হই যে তিনি তিনজন সঙ্গীসহ গ্রেফতার হয়েছেন। আমি থানায় গেলে ওসি সাহেব বলে তাঁকে রাজশাহী পাঠানাে হয়েছে। অতঃপর দুপুরের দিকে রাজশাহী কোর্টে গিয়ে জানা যায় যে তাঁকে এখনাে কোর্টে প্রেরণ করা হয় নাই। এরপর পর পর দুই দিন ঘুরেও তার কাগজ কোর্টে পাওয়া যায় নাই। ৭’ই ডিসেম্বর ২০২১ইং তারিখের গভীর রাত্রিতে তারা আমার বাসার জানালার গ্লাস এবং বাসার সামনের বাগানের গাছ ভাংচুর করে। এইসব বিষয় নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও থানা কোন মামলা নেয় নি। ওসি সাহেবকে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন না। সংবাদ সম্মেলনের স্থল থেকে রাজশাহী জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখ্যপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। যথাযথভাবে অভিযোগ করলে অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ধরণের আরো কিছু খবর