দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’কে সামনে রেখে রাজনীতিতে ‘প্রস্তুতি’ শুরু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো প্রায় আড়াই বছর বাঁকি, এরই মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সব দলই তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোও গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেয়া শেষ করেছে।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২০২৩ সালের শেষের দিকে কিংবা ২০২৪ সালের শুরুর দিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। এর আগেই আওয়ামী লীগ নিজেদের গুছিয়ে নেবে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। অবশ্য, তার আগেই ৭৮টি সাংগঠনিক জেলাসহ উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আওয়ামীলীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, তৃণমূল সম্মেলনের পর পুরোদমে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
সেইসঙ্গে ভোটের হিসাব-নিকাশ মেলানোর জন্য কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে আওয়ামী লীগ। একই চিন্তা রয়েছে কয়েকটি বামপন্থি রাজনৈতিক দল নিয়েও। এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে মহাজোটে নির্বাচনি জোটের পরিধি বাড়ানো হবে।
অন্যদিকে রাজনীতির মাঠে দুর্বল ও সাংগঠনিকভাবে ঝিমিয়ে পড়া কোণঠাসা বিএনপিও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন টার্গেট করে ভেতরে ভেতরে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সেই লক্ষ্যে তারাও তৃণমূলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিচ্ছে। তারা সুনির্দিষ্টভাবে চারটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতির মাঠ গোছাবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে এক দফা দাবিতে ‘নতুন রূপে’ আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
আগামী নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শীর্ষ নেতা। বর্তমানে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আরো কাছে টানার ভাবনা রয়েছে। ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে সম্পর্কের আরো উন্নয়ন ঘটানোর উদ্যোগ থাকবে।
চলতি মাস থেকে’ই ঢাকা বিভাগে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলোর সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামীলীগের। প্রথমেই রাজবাড়ী জেলার সম্মেলন হবে। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোর সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছেন এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।
এদিকে বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ে ডান-বাম সব রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে এক প্ল্যাটফরমে একত্র করতে চায় বিএনপি। এ ব্যাপারে দলের পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। তবেঁ, ২০ দলের অন্যতম শরীক জামাতে ইসলামকে কার্যত ‘নিষ্ক্রিয়’ করে রাখার কৌশল চলছে, যাতে বৃহত্তর ঐক্যজোটের পথে অন্যতম বাধা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীকে ধীরে ধীরে জোটের বাইরে ঠেলে দেওয়া যায়।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেনি। জাতীয় ঐক্য ছাড়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কঠিন। জামায়াত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও রাজপথে প্রতিবাদমুখর থেকেছে। আগামী দিনেও সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী দেশ গড়ার রাজনীতি অব্যাহত রাখবে।

একাত্তর জার্নাল বার্তা বিভাগঃ

এ ধরণের আরো কিছু খবর