বগুড়ার নন্দীগ্রামে নির্মানাধীন মডেল মসজিদের গ্রেটবীমে ধ্বস, মাটি দিয়ে ভরাট করে চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সরকারি মডেল মসজিদের গ্রেটবীম ধ্বসে গেছে। জানাজানি হওয়ার পর রাতের অন্ধকারে সেখানে মাটি ফেলে ধ্বসে যাওয়া অংশ ভরাট করা হয়েছে। নিম্নমানের কাজের কারণে এমনটা হয়েছে বলে স্থানীয়’রা অভিযোগ করেছেন। গ্রেটবীম ধ্বসে যাওয়ার কারণে পুরো ভবনটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে নির্মাণ ত্রুটির কারনে নয় গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ধ্বসে গেলেও পাইলিংয়ের মাধ্যমে তা পূর্ন:সংস্কার করা হবে।
সরকারের প্রতি উপজেলায় একটি করে নান্দনিক মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ চত্বরে পুকুরপার ঘেষা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদটির ১২ কোটি ৫০ লাখ ৭২ হাজার টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরে ২০১৯ সালের ফেব্রয়ারী মাসে শেরপুরের এমএম এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। গণপূর্ত অধিপ্তরের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ৩ বছর সময় বেধে দেয়া হয়। আগামী মাসেই নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। এদিকে হঠাৎ করে গত ২ দিন আগে থেকে মসজিদের পশ্চিম পাশের বেজমেন্টে (গ্রেডবীম) ধ্বস শুরু হয়। ধ্বস শুরু হওয়ার সাথে সাথেই নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের লোকজন বাঁশ দিয়ে ধ্বস ঠেকাবার চেষ্টা করে। তারা বাঁশের খুটি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত গ্রেটবীমের ওয়ালের পাশের অংশ ঠেস দিয়ে রাখে। গত দুই দিনে বেশ কিছু অংশ ধ্বসে গেলে নির্মাণাধীন মসজিদটি হুমকির মধ্যে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার রাতে সেখানে মাটি ফেলে ধস ঠেকানোর চেষ্টা করে। এদিকে এ বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিতে ধরা পড়লে এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ,নিম্নমানের কাজের কারনে ধ্বস নেমেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী শা-রিদ নির্মানাধীন মসজিদ পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন,পুকুর ঘেষে মসজিদ তৈরি করায় ন্যাচারালি সাপোর্ট না থাকায় গোড়া থেকে মাটি ধ্বসে যাচ্ছে। যার কারনে মসজিদটি অনেকটা হুমকির মধ্যে রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম এম এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার সারোয়ার রহমান মিন্টুর সঙ্গে টেলিফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রকল্পটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগ বগুড়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিউল আলম বলেন,বেজমেন্ট থেকে মাটি ধ্বসে গেলেও তেমন কোন ক্ষতি হবেনা। সেখানে বাউন্ডিারী ওয়াল করতে গিয়ে মাটি ধসে গেছে। তিনি আরও বলেন,পাইলিং এর মাধ্যমে সেখানে সংস্কার কাজ করা হবে। পাইলিং করা হলে মসজিদের আর কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা।
এদিকে, স্থানীয় লোকজন বলছেন, গ্রেটবীম ধ্বসে যাওয়ার কারণে যদি পুরো নির্মানের কোন ক্ষতির আশংকা না থাকে তাহলে রাতের অন্ধকারে তড়িঘড়ি করে কাউকে না জানিয়ে, এমনকি কোন দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিদর্শনের পুর্বেই কেন ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মাটি ভরাট করে ঢেকে দেওয়া হল? তারা এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ধরণের আরো কিছু খবর